হুগলি জেলার বাঁশবেড়িয়ার জমিদার কুমার মুনীন্দ্রদেব রায় মহাশয় ছিলেন বঙ্গদেশে তথা ভারতবর্ষের গ্রন্থাগার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত। ১৯২৫ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে নিখিল বঙ্গ গ্রন্থাগার পরিষদ গঠিত হলে তিনি তার সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৩৩ সালে যখন নিখিল বঙ্গ গ্রন্থাগার পরিষদের নাম পরিবর্তিত হয়ে বঙ্গীয় গ্রন্থাগার পরিষদ হল তখন তিনি পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৪৫ সালে তার মৃত্যুকাল পর্যন্ত তিনি পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৩০ সাল থেকে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য ছিলেন। বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় ১৯৩২ সালে তিনি বঙ্গীয় সাধারণ গ্রন্থাগার বিল উত্থাপনের চেষ্টা করেন। কিন্তু তৎকালীন বৃটিশ সরকার এই আইন উত্থাপনের অনুমতি দেননি।
মুনীন্দ্রদেব রায় মহাশয় ১৯২৯ – ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত হুগলি জেলার বাঁশবেরিয়া মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।১৯৩৪ সালে বঙ্গীয় গ্রন্থাগার পরিসরের সহযোগিতায় বাঁশবেরিয়া তে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানের যে প্রশিক্ষণ শুরু হয় তার প্রধান প্রেরণাদাতা ছিলেন কুমার মুনীন্দ্রদেব রায় মহাশয় ।
বিভিন্ন সর্বভারতীয় গ্রন্থাগার সম্মেলনে তিনি অংশগ্রহণ করতেন। ১৯৩৬ সালে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় সাধারণ গ্রন্থাগার সম্মেলনে তিনি সভাপতিত্ব করেন। ১৯৩৮ সালে তিনি গ্রেট ব্রিটেনে সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের গ্রন্থাগার ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন।।
তারই প্রেরণায় " বেঙ্গল লাইব্রারি অ্যাসোসিয়েশন বুলেটিন" এবং " ডাইরেক্টরি অফ লাইব্রারিজ ইন বেঙ্গল " ১৯৪২ সালে প্রকাশিত হয়। তিনি ' গ্রন্থাগার' ও 'দেশ-বিদেশের গ্রন্থাগার' নামে দুটি গ্রন্থ রচনা করেন। তারই আমন্ত্রণে ডক্টর এস আর রঙ্গনাথন অবিভক্ত বঙ্গ দেশের গ্রন্থাগার গুলি পরিদর্শনে আসেন।।