বঙ্গীয় গ্রন্থাগার আন্দোলনে "সুশীল কুমার ঘোষ " মহাশয় এর অবদান (১৮৯৪–১৯৬৪) | Contribution of Sushil Kumar Ghosh in Bengal Library Movement (1894-1964)

 বঙ্গীয় গ্রন্থাগার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত সুশীল কুমার ঘোষ পেশায় অগ্রন্থাগারিক হলেও গ্রন্থাগার আন্দোলনের একজন নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন।

    কলকাতার এক শিক্ষিত উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে তার জন্ম। প্রথমে তিনি আইন ব্যবস্থা ও শিক্ষকতা বৃত্তির সঙ্গে যুক্ত থেকে পরবর্তীকালে কলকাতা পৌরসভার শিক্ষা বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হন।

  বাল্যকাল থেকে লাইব্রেরীর প্রতি টান থাকলেও বিশ শতকের তৃতীয় দশক থেকে সুশীল বাবু বাংলাদেশের গ্রন্থাগার আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন।

  ১৯২৪ সালে বেলগাঁও তে জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনের সমাপ্তির পর ওইখানেই দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে  " নিখিল ভারত সাধারণ গ্রন্থাগার সম্মেলন " অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করতে গিয়ে সুশীল বাবু বলেন যে , 

      " জনসাধারণের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ বৃদ্ধির জন্য চাই ব্যাপক সমাজ শিক্ষার আয়োজন এবং গ্রন্থাগারই সেই কাজের পক্ষে সর্বাপেক্ষা উপযোগী মাধ্যম"। 

   এই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রদেশের গ্রন্থাগার আন্দোলন পরিচালনার জন্য সুশীল বাবু ওই সম্মেলনের প্রস্তাব করেন যে প্রতি প্রদেশের একটি করে গ্রন্থাগার পরিষদ গঠন করা হোক। তার পরের বছরই হাজার ১৯২৫ সালে কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে নিখিলবঙ্গ গ্রন্থাগার ( পরবর্তীকালে বঙ্গীয় গ্রন্থাগার পরিষদ) প্রতিষ্ঠিত হয়।

    সুশীল কুমার ঘোষ এই পরিষদের প্রথম কর্মসচিব নির্বাচিত হন। পরিষদের কর্মসচিব হিসেবে অবিভক্ত বঙ্গ দেশের বিভিন্ন জেলার গ্রন্থাগার গুলি পরিদর্শন করেন এবং গ্রন্থাগার পরিষেবা ও গ্রন্থাগার আন্দোলন সম্পর্কে জনমত গঠন করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন।

    সর্বভারতীয় সাধারণ গ্রন্থাগার পরিষদ এবং হাজার ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত সর্বভারতীয় গ্রন্থাগার পরিষদের সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন । কলকাতা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট, ভারত সভা, এশিয়াটিক সোসাইটি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

   তিনি বাংলা ভাষায় গ্রন্থাগার আন্দোলন সম্পর্কে যে গ্রন্থটি রচনা করেন তা হলো :– 

      "লাইব্রেরী আন্দোলন ও শিক্ষা বিস্তার " ।

 এই গ্রন্থটি ১৯৩৭ বঙ্গাব্দে গ্রন্থাগার পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত হয়।


Post a Comment

Previous Post Next Post