১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের গ্রন্থাগার আইন পাশ হয়। ইংল্যান্ডের এই আইনের পূর্বে ব্রিটেনে গ্রন্থাগার গুলি নিন্মলিখিতভাবে প্রতিষ্ঠিত হত।
i) ধর্মীয় গ্রন্থাগার- মধ্যযুগে ইউরোপে খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে গীর্জাগুলোতে নিজস্ব ধর্ম পুস্তক ও পান্ডুলিপির সংগ্রহের মাধ্যমে এই সমস্ত ধর্মীয় গ্রন্থ গুলি গড়ে ওঠে।
ii) দানপত্র দ্বারা গঠিত গ্রন্থাগার - পঞ্চদশ শতাব্দীতে এক বা একাধিক ব্যক্তির দ্বারা এই ধরনের গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই সমস্ত গ্রন্থাগার আন্দোলন প্রধানত প্রাদেশিক গ্রন্থাগার ছিল।
iii) গ্রাহক চাঁদায় পরিচালিত গ্রন্থাগার - মানুষের পড়াশোনার অভ্যাস গড়ে তোলা, শিক্ষার প্রসার, সংবাদপত্রের আবির্ভাব এর ফলে গ্রাহক চাঁদা মাধ্যমে ব্যক্তিগত বা সংগঠিতভাবে এই সমস্ত গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৫০ খ্রিস্টাব্দের আগে পর্যন্ত প্রধানত তিন ধরনের গ্রাহক চাঁদায় পরিচালিত গ্রন্থাগার ছিল। সেগুলি হল -
a) ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত চাঁদার গ্রন্থাগার - বন্ধু আত্মীয়স্বজন বা সদস্যরা নিজস্ব উদ্যোগে বই বা নগদ অর্থ বা এককালীন অনুদান ইত্যাদির মাধ্যমে এই ধরনের গ্রন্থাগার গড়ে তুলেছিলেন। এইরকম চাদর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত গ্রন্থাগার নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত।
b) বুক ক্লাব - অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে ইংল্যান্ডে 'বুক ক্লাব' খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। কম সদস্যবিশিষ্ট এই ধরনের চাঁদার গ্রন্থাগারে সদস্যরা নিজেদের মধ্যে পুস্তক বিনিময়ের মাধ্যমে বা নতুন পুস্তক কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে তাদের সামাজিক দায়িত্ব পালন করতেন।
c) ব্যবসাভিত্তিক ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগার - লাভ করার উদ্দেশ্যে পুস্তক বিক্রেতাদের দ্বারা এই ধরনের গ্রন্থাগার পরিচালিত হতো। নগদ মূল্যের বিনিময়ে এইসব গ্রন্থাগার থেকে ধারে পুস্তক পাওয়া যেত। এলন রামসে নামক একজন পুস্তক বিক্রেতা ১৭২৫ খ্রিষ্টাব্দে এডিনবার্গে সর্বপ্রথম এই ধরনের গ্রন্থাগারটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
iv) কারিগরী প্রাতিষ্ঠানিক গ্রন্থাগার - শিল্প বিপ্লবের পর শিল্পক্ষেত্রে যন্ত্র ব্যবহারের ফলে শিক্ষানবিশদের প্রশিক্ষণ ও শ্রমিকদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে কারিগরি প্রাতিষ্ঠানিক গ্রন্থাগার গড়ে ওঠে। এইসব গ্রন্থাগারে মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা, বক্তৃতা, সহশিক্ষার ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা, চিত্তবিনোদন ইত্যাদি চাহিদা মেটানো হত।